এক সময় এক সুন্দর বনে, নানা আকার-বর্ণের বহু প্রাণী, নানা রঙ-বেরঙের গাছ, এমনকি নানা আকৃতি-রঙের ফুলে ভরা ছিল। প্রজাপতিরা আনন্দে উড়ত। মৌমাছিরা নিরাপদে বাস করত এবং প্রতিটি প্রাণী আনন্দিত এবং খুশি ছিল।


প্রতিদিন সকালে, সমস্ত প্রাণীরা বনের মধ্যে খাবার, পানীয় খুঁজতে বেরিয়ে আসত। প্রাণীরা প্রতিদিন বনে যাওয়ার পথে খুব বড় অলস ভালুকের পাশ দিয়ে চলে যেত। ভাল্লুকটি খুব অলস ছিল এবং সে কিছুই করত না। সে বসে থাকত। অলস হয়ে শুয়ে থাকত বিশাল এক গাছের নীচে কোনো নড়াচড়া করা ছাড়াই। সে অন্য প্রাণীদের মতো খাবারের সন্ধান করত না। 

একটি হাতি এবং জিরাফ তাকে জিজ্ঞেস করে - তুমি এভাবে শুয়ে আছো কেন? আমাদের সাথে চলো খাবারের সন্ধান করতে। 
অলস ভাল্লুক বলল- আমি তোমাদের মতো বোকা নই। তোমরা যাও। আমি এ বড় গাছের ডালে যে মধু আছে তা খেয়েই আমার ক্ষুধা মিটাবো। আমার এ রোদের মধ্যে খাবার সন্ধান করার কোনো দরকার নেই। এ বিশাল গাছে যে মধুর ভান্ডার আছে তাই আমার জন্য যথেষ্ট। 
হাতি ও জিরাফ তাকে রেখে চলে গেল। আর ভাল্লুক আবার নিজের জায়গায় ঘুমিয়ে থাকে। 


একদিন অলস ভাল্লুকটি যথারীতি গাছের পাশে বসে ছিল। সে আনন্দের সাথে তার মূল্যবান মধুর ভান্ডারের দিকে তাকাচ্ছিল। সে হঠাৎ সেখানে মধুর উপরে একটি খুব বড় সাপ দেখতে পেল এবং সে একটি ইঁদুর ও দেখতে পেল। সাপটি তার বিষ ছুঁড়ে মারলো ইদুরটির দিকে । সাপের বিষ ইঁদুরের গায়ে পড়ল। কিছু বিষ মধুর উপরেও পড়ল। মধু সম্পূর্ণ বিষাক্ত হয়ে গেল।


ভাল্লুক তা দেখে বলতে শুরু করল - হায়! এ কি হলো আমি এবার কি করব। আমিতো আর মধু খেতে পারবো না। আমারতো কোনো খাবারও নেই। 
ভাল্লুক তার পায়ের উপর দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগল। সে খুব ক্ষুধার্ত ছিল এবং সূর্য অস্ত হয়ে গেল। সে এখন খাবার খুঁজতে যেতে পারবে না। 
কিছুক্ষণ পর ওই হাতি আর জিরাফ তাদের বাড়ি ফিরছিল তাদের রাতের খাবার নিয়ে। তারা ভাল্লুক কে কাঁদতে দেখল আরা জিজ্ঞেস করল- ভাল্লুক ভাই তুমি কাঁদছ কেন? 
ভাল্লুক জবাব দিল- আমার মধুকে সাপ বিষ দিয়ে বিষাক্ত করে দিয়েছে। আমি সেটা এখন খেতে পারব না। আমার কিছু খাওয়ার নেই। 
তখন জিরাফ আর হাতি তাদের খাবার থেকে কিছু তাকে দিল আর বলল- এখন থেকে তুমিও আমাদের মতো খাবার খুঁজতে যেও। 
ভাল্লুক বলল- হ্যাঁ এখন থেকে আমি আর অলসতা করবো না। নাইলে আবার আমি ক্ষুধার্ত থাকবো। 

অনুবাদক :আদিলা নুর তাবাসসুম