অনেক আগের কথা,,, 
একটি শেয়াল সেবক হিসেবে একটি নেকড়ের সঙ্গে থাকত, এবং নেঁকড়ে তাকে যা করতে বলত তাকে তা করতে হত। কারণ সে তার চেয়ে দুর্বল ছিল। শিয়াল তার থেকে পরিত্রাণ পেতে চেয়েছিল।

একবার তারা বনের মধ্য দিয়ে একসাথে হেঁটে যাওয়ার সময় নেকড়েটি শিয়ালকে বলল- শিয়াল, আমাকে কিছু খেতে দাও আমার ক্ষিধে পেয়েছে। নইলে আমি তোমাকে খাব!

এবং শিয়াল উত্তর দিল - আমি একটি কৃষকের খামার চিনি, সেখানে দুটি ভেড়ার বাচ্চা আছে; আপনি যদি খেতে চান তবে আসুন আপনাকে নিয়ে যাই।

নেকড়ে রাজি হলো। তারা সেখানে গেলএবং শেয়াল ভেড়ার বাচ্চা চুরি করে নেকড়ে কাছে নিয়ে গেল এবং পালিয়ে গেল। নেকড়ে ভেড়ার বাচ্চা খেয়েছিল, কিন্তু এটি তার জন্য যথেষ্ট ছিল না। সে আরেকটি খেতে চেয়েছিল এবং সে নিজেই ভেড়ার বাচ্চা নিতে গিয়েছিল। কিন্তু ভেড়ার মা নেকড়েটিকে লক্ষ্য করল এবং চিৎকার করতে শুরু করল। য়ার চিৎকার শুনে কৃষকরা ছুটে এল। তারা একটি নেকড়েকে খুঁজে পেল এবং তাকে অনেক মারধর করল। সে দৌড়ে পালিয়ে শেয়ালের কাছে এসে গেল।

শিয়াল তাকে দেখে জিজ্ঞেস করে - আপনার কি হয়েছে? 
নেকড়ে বলে -আমি আর একটা ভেড়ার বাচ্চা টেনে নিয়ে আসতে চেয়েছিলাম কিন্তু চাষীরা আমাকে ধরে ফেলে এবং আমাকে অনেক মারধর করে। 

শিয়াল তা শুনে মনে মনে ভাবে - নেকড়েটা অনেক লোভী। 

দ্বিতীয় দিন তারা মাঠে হাঁটছিল এবং নেকড়ে আবার বলল - শিয়াল, আমাকে কিছু খেতে দাও, নইলে আমি তোমাকে খেয়ে ফেলব।

এবং শিয়াল উত্তর দিল - আমি একজন কৃষকের বাড়ি চিনি, আজ সন্ধ্যায় সেখানে কেক বানানো হয়েছে। চলুন সেগুলি নিয়ে আসি।

তারা সেখানে গেল এবং শেয়ালটি পুরো বাড়িটি চারপাশে অনুসন্ধান করল। সমস্ত কিছু দেখল এবং কেকটি কোথায় তা খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত খুঁজছিল, তারপরে সে কিছু কেকের টুকরো টেনে নেকড়ের কাছে নিয়ে আসে।

শিয়াল নেকড়েকে বলল -আপনি খান। তারপর সে বনে তার নিজের জন্য খাবার খুঁজতে চলে গেল।

নেকড়ে এক মুহূর্তের মধ্যে কেকের টুকরো গুলো গিলে ফেলে এবং বলে- এগুলি এতই সুস্বাদু যে আমি আরও খেতে চাই।

সে কৃষকের বাড়িতে গিয়ে পুরো কেকের বাটিটি মেঝেতে ফেলে দেয়। কাচের বাটিটি নিচে পড়ে ভেঙে যায় আর অনেক জোরে শব্দ হয়। শব্দ শুনে কৃষক ঘরে ঢুকে আর নেকড়ে টাকে দেখতে পায়। সে সাহায্যের জন্য লোকদের ডাকতে শুরু করে। লোকেরা দৌড়ে যায় আর নেকড়েকে যে কোনও কিছু দিয়ে মারতে শুরু করে। সে কোনোমতে পালিয়ে আসে। সে উভয় পায়ে প্রচন্ড জোরে আঘাত পায় এবং জোরে চিৎকার করে বনে শেয়ালের দিকে যাগ ।

নেকড়ে চিৎকার করে উঠল - কৃষকরা আমাকে অনেক পিটিয়েছে! 

শিয়াল বলে - আপনি কি আবার কেক আনতে গিয়েছিলেন? 

নেকড়ে বলে- হ্যাঁ, গিয়েছিলাম। 

তৃতীয় দিন আবার নেকড়ে শিয়ালের কাছে কিছু খেতে চাইলো। 
এবার শিয়াল বলল - আমি একজন কৃষককে চিনি, সে একটি গরু মেরেছে, এবং লবণাক্ত মাংস তার গুদামে সংরক্ষণ করে রেখেছে একটি ব্যারেলে রয়েছে। 

নেকড়ে বলল -তাহলে চল তাড়াতাড়ি একসাথে যাই। কিন্তু গুদামে আমরা ঢুকবো কিভাবে? 

শিয়াল বলল- গুদামের পিছনে একটি ছোট গর্ত আছে সেখান দিয়ে। 

নেকড়ে বলল - তাইলে চল! 

তারা গুদামের পিছনে গেল। সেখানে গিয়েই নেকড়ে বলল- শোনো শিয়াল তুমি এখানে দাঁড়িয়ে থাকো আর দেখ কেউ আসছে কিনা। আমি ভিতরে ঢুকে মাংস খেয়ে আসি। 
নেকড়ে গুদামে ঢুকল আর দেখল সেখানে অনেক মাংস।নেকড়ে ভাবে - আমি সব মাংস খেয়ে পেলবো। অনেক সময় আছে। সে মাংস খাওয়া শুরু করল। 

অন্যদিকে শিয়াল বাইরে দাঁড়িয়ে। সে হঠাৎ দেখতে পেলো কৃষক গুদামের দিকে আসছে। সে নেকড়ে কে ডাক দিলো। কিন্তু নেকড়ে খাবার খাওয়ায় এতো মগ্ন ছিলো যে সে তার আওয়াজ শুনতেই পেলো না। 

শিয়াল তার প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে গেলো। এদিকে কৃষক গুদামে নেকড়ে কে দেখেই তাকে তার কুড়াল দিয়ে আঘাত করে। নেকড়ে পালাতে চেয়েছিল কিন্তু সে ব্যর্থ হয় কারন তার পেট এতো খাবার খাওয়ার পলে ভোরে ছিল এবং সে নড়াচড়া করতে পারছিলো না। কৃষক তার কুড়াল দিয়ে নেকড়ে কে হত্যা করে। 


এদিকে শিয়াল বনে দৌড়ে গেল এবং সে পরবর্তিতে জানতে পেরেছিল যে নেকড়ে মরে গাছে। সে খুশি হয়েছিল যে সে এমন লোভী নেকড়ে থাকে মুক্তি পেয়েছে।

অনুবাদক : আদিলা নুর তাবাসসুম