হ্যালো!!
এই যে আপনাকে বলছি। আমার পূর্বের ব্লগটি কি পড়েছেন? পড়লে এবারের ব্লগটি আপনার জন্য।
আর যদি না পড়ে থাকেন, তাহলে তাড়াতাড়ি পড়ে আসুন "রেডিয়ান কোণ ও ৬০ ডিগ্রী কোণ কি একই!!"
এবার আসি, গতপর্বের রহস্যের সমাধানে।
গতপর্বেই আমি আপনাদের জানিয়েছি রেডিয়ান কোণের সংজ্ঞাটা পড়ার সাথেই আমার মাথায় একটা ভুল চিন্তা গেঁথে যায়। সেটা হচ্ছে, রেডিয়ান কোণের ক্ষেত্রে পরিধির উপর ঐ বৃত্তের ব্যাসার্ধের সমান চাপ নেয়া হয়। ৬০ ডিগ্রী কোণ অঙ্কনের ক্ষেত্রেও সমান ব্যসার্ধের দুইটি বৃত্তচাপ আঁকা হয়। উপরোক্ত দুইটি বাক্য আমার মাথায় এই আজগুবি-বেকুবী-গোঁজামিল চিন্তার জন্ম দেয় আবার সেই একই দুই লাইনই আবার সমাধান দেয়।
কি করে?
দেখুন প্রকৃতপক্ষে,
১ রেডিয়ান কোণ=২/পাই সমকোণ
= ৫৭.২৯৫৮ ডিগ্রী (প্রায়)
এখানে দেখা যায়, ১ রেডিয়ান কোণ আর ৬০ ডিগ্রী এর মধ্যে খুবই সূক্ষ্ম পার্থক্য। প্রায় ২.৭০৪২ ডিগ্রী এর মতো। কেনো মানটা ৬০ এর খুব কাছাকাছি? আর কেনোই বা এটা আমার তৎক্ষণাৎ চিন্তার অগোচরে রয়ে গিয়েছিলো?
আসলে আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কের সূক্ষ্ম প্রয়োগের সামান্য তারতম্যের কারণে এই বৃহৎ ভুলের উৎপত্তি। পদার্থবিজ্ঞানে দূরত্ব ও সরণ নিয়ে আমরা সবাই পড়েছি। সেখানে আমরা আঁকাবাঁকা পথে ৪ কিমি অতিক্রম করলেও এমন হতে পারে যে সরণ মাত্র ১ কিমি। অর্থাৎ বেশি দূরত্ব অতিক্রম করলেই বেশি সরণ হবে সেটি সত্যি নয়! কারণ শুরু থেকে শেষ অবস্থানের পার্থক্য হচ্ছে সরণ।
এখানেও দূরত্ব ও সরণের ব্যাপারটা আছে।
আমরা যখন ৬০ ডিগ্রী কোন আঁকার ক্ষেত্রে বৃত্তচাপ দিই তখন সরণের ঘটনাটা ঘটে। অর্থাৎ শুরু থেকে শেষ অবস্থানের পার্থক্য।
আর রেডিয়ানের ক্ষেত্রে ব্যাসার্ধের সমান চাপ, মানে এটি একটি বৃত্তীয় বা গোলকীয় দূরত্ব অতিক্রম করে। ফলে, রেডিয়ানের ক্ষেত্রে পরিধিস্থ দূরত্বটা কম এবং ৬০ ডিগ্রী এর ক্ষেত্রে পরিধিস্থ দূরত্বটা বা চাপটা বেশি হয়ে যায়।
আমরা জানি, বৃত্তের কোনো চাপের উপর দণ্ডায়মান কেন্দ্রস্থ কোণ ঐ বৃত্তচাপের সমানুপাতিক। অর্থাৎ চাপ বেশি হলে কেন্দ্রস্থ কোণের মান বেশি হবে, চাপ কম হলে কেন্দ্রস্থ কোণের মান কম হবে।
এখন যেহেতু ৬০ ডিগ্রী এর ক্ষেত্রে চাপ রেডিয়ান কোণের চাপ অপেক্ষা বেশি, তাই কেন্দ্রস্থ কোণও রেডিয়ান কোণ অপেক্ষা বেশি।
৬০ ডিগ্রী এর ক্ষেত্রে চাপ > রেডিয়ানের ক্ষেত্রে চাপ
বা, ৬০ ডিগ্রী > ১ রেডিয়ান কোণ
বা, ৬০ ডিগ্রী > ৫৭.২৯৫৮ ডিগ্রী
সুতরাং, ৬০ ডিগ্রী কোণ ও রেডিয়ান একই নয়।
আসলে পুরো ঘটনাটা অনেকের কাছে পান্তাভাত। যাইহোক, একটা ভুল চিন্তা মাথায় আসার পর তার সমাধান নিজে উপলব্ধি করার পর মুখের কোণে যে হাসির রেখা ফুটে উঠে, সেই হাসিটাই পরবর্তীর জন্য অণুপ্রেরণা।
ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার জন্য।
( ভুলগুলো কমেন্টে জানিয়ে দিতে পারেন )
লেখিকা : রুকাইয়া জাহান
0 Comments