সেই ১১ই মার্চ, ২০২০...শেষ স্কুলের ডায়েরীতে পড়া লিখেছিলাম। সেদিন ডায়েরীটা কোনো এক কারণে হারিয়ে যায়, আর তাই পরের সাত দিনের পড়া ডায়েরীতে আর তুলা হলো নাহ্‌। 

আজ ১২ই সেপ্টেম্বর, ২০২১।

মাঝখানে যে ৫৪৪ দিন কাটে তার কথা কারোরই অজানা নয়। দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি এমন দিন আসবে। একটা শুক্রবারের জন্য যেই  আমরা মরিয়া হয়ে উঠতাম, সেই আমাদের জীবনটা যেন শুক্রবারময় হয়ে উঠলো। স্কুলে না যাওয়ার জন্য মায়ের কাছে যে বায়না ধরতাম, মহান প্রভু সেই সে মনোঃকামনা এতো তাড়াতাড়ি পূর্ণ করবে, তা আমার এই ক্ষুদ্র মগজের মস্তিষ্ক কখনো ভাবতেই পারেনি। সকালে ঘুম থেকে উঠে স্কুলে যাওয়া, বিকেলে ক্লান্ত দেহে ফিরে আসা- এই অভ্যাস গুলো খুব মিস করতাম। আর তখনই আবিষ্কার করলাম, "মানুষ অভ্যাসের দাস" কথাটা কতটা ভুল!! বরং অভ্যাসই মানুষের দাস।    
২০২১ সালের প্রত্যাশিত সেই ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন যেনো আজ পরিপূর্ণ। ঘরে বসে অনলাইন ক্লাস করছি।
আজ স্কুলের ড্রেস টা স্পর্শ করে, পরে এক অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে। যেন স্কুলের প্রথম দিনের অনুভুতিগুলো গুটিগুটি পায়ে কাছে আসছিলো। স্কুলের ব্যাগটা কাঁধে নিয়েও নিজেকে মুক্ত লাগছিলো, যেনো এক মুক্ত  পাখি। 
দীর্ঘ দেড় বছরে পালটে যাওয়া বান্ধবীদের সাথে আজ ভাব জমাতে বেশ ইচ্ছে হচ্ছিলো। কিন্তু সেই ৩ ফুট দূরত্ব। মাস্ক, হ্যান্ড স্যনিটাইজ, তাপমাত্রা এগুলো নিয়ে যদিও মনটা বেশ উদ্বিগ্ন। ভাবতেই যেনো অন্যরকম, সেই আগের মতো ডায়েরী লিখবো, স্কুল শুরুর ও ছুটির ঘন্টার ওই মন্ত্রমধুর শব্দ শুনবো।   
এই ব্যস্তময় শহরে করোনা কেবল অতিথি হয়েই থাক। স্কুল প্রাঙ্গনে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণগুলোর আবার আনাগোনা ঘটুক। আর সেই আনাগোনা বজায় থাকুক।
সারাদিন ক্লাস শেষে ঘর্মাক্ত, ক্লান্ত হয়ে আমরা আবার ঘরে ফিরতে চাই। ক্লান্তির শেষের সেই  ঘুমটাই যেনো শান্তি, যেনো স্বস্তি। 
ভালো থাকুক সবাই, সুস্থ থাকুক।
করোনা বিদায় নিক।
সেই কামনায়...

লেখক : রুকাইয়া জাহান 
- Special thanks to ADILA